ভোট ডাকাতির মহোৎসব ইতিহাসের কালো অধ্যায়

ঢাকা-৪ আসনের ভোট বর্জনের ঘোষণা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীর

সরকারদলীয় প্রার্থীদের হুমকি-ধমকি, হামলা, পিস্তল ঠেকানো, অফিস ভাংচুর, অফিসে আগুন দেওয়া ও নিরপরাধ কর্মীদের অপহরণ, গ্রেফতার-হয়রানীর ঘটনা উৎসবের নির্বাচনকে আতঙ্কের নির্বাচনে পরিণত করেছে। নির্বাচনের নামে পুলিশ র‌্যাবের পাহারায় ভোটডাকাতির মহোৎসব ইতিহাসে কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। গতকাল দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা-৪ আসনের প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী তার আসনের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণ দেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি লাঙ্গল মার্কায় সিল মারা দু’টি ব্যালট পেপার প্রদর্শন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুুবুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, নগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল শেখ ফজলে বারী মাসউদ ও ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভোটবিহীন একতরফা দশম সংসদ নির্বাচনের পর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কিছুটা আশা নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু গতকাল সারাদেশে নির্বাচনের নামে যে তামাশা হয়েছে, তাতে দেশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ হচ্ছে, অধিকাংশ আসনে ভোট শুরুর কিছুক্ষণ পর থেকেই দলের সকল এজেন্টকে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে একতরফা সিল মারা হয়। কিছু আসনে নিয়মতান্ত্রিক ভোটগ্রহণ শুরু হলেও এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যেই ব্যালট পেপার শেষ হয়ে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানান। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেক ভোটার শেষ পর্যন্ত তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। বেলা ১১টার পরে অনেক কেন্দ্রে ব্যালেট পেপার নেই বলে। এতেই প্রমাণিত, আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট শুরুর আগেই সরকারদলীয় লোকেরা ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে রেখেছে। কোথাও কোথাও এই ভোট ডাকাতি প্রতিহত করতে গেলে হাতপাখার এজেন্ট, ভোটারদের ওপর সশস্ত্র হামলা ও এজেন্টদের গুম করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে গতকাল বেলা ২টার পূর্ব পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশ থেকে প্রাপ্ত অনিয়ম, ভোট কারচুপি ও ভোট ডাকাতির চিত্র তুলে ধরা হয় তা হচ্ছে; ভোট কেন্দ্রসমূহ থেকে হাতপাখার অধিকাংশ এজেন্ট বের করে দেয়া, হাতপাখার ভোটারকে প্রকাশ্যে ভোট নৌকায় দিতে চাপ বাধ্য করা। ব্যালট পেপার অনেক জায়গায় ১১টার আগেই শেষ হয়ে যাওয়া। হাতপাখার ভোটারসহ সকল ভোটারকে নখে কালি মাখিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে আওয়ামী এজেন্ট কর্তৃক ব্যালটে নৌকায় সিল মেরে বাক্সে ফেলা। রিটার্নিং অফিসার হাতাপাখার প্রার্থীদের সকল অভিযোগ গ্রহণ না করাসহ হাতপাখার এজেন্টদের উপর হামলা চালানো হয়। আসনগুলো হচ্ছে ঢাকা-৬, চাঁদপুর-১, ঢাকা-৪, দিনাজপুর-৪, নীরফামারী-৪, বগুড়া-৩, নাটোর-১, নোয়াখালী-২, শেরপুর-১, ময়মনসিংহ-১০, ঢাকা-১৬, কুষ্টিয়া-২, কুমিল্লা-৬, নারায়ণগঞ্জ-৪, চট্টগ্রাম-৯, ঢাকা-১৩, সিরাজগঞ্জ-৪, সুনামগঞ্জ-১, বগুড়া-৭, জয়পুরহাট-২।

Print Friendly, PDF & Email